কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার বিক্রি বাড়ানোর পরও দেড় মাস স্থিতিশীল থাকার পর আবারও বাড়ছে ডলারের দাম। গত রোববার থেকে এক ধাক্কায় ২০ পয়সা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৬ টাকা। গতকালও এ দামে ডলার লেনদেন হয়েছে। যদিও ব্যাংকগুলো নগদ ডলার বিক্রি করছে তিন থেকে চার টাকা বেশি দরে। ব্যাংকের বাইরে ওপেন মার্কেট বা কার্ব মার্কেটে প্রতি ডলার বিক্রি হয় ৯১ টাকা থেকে ৯২ টাকায়। ডলারের দাম বাড়লে রেমিটর ও রপ্তানিকারক লাভবান হলেও ক্ষতির মুখে পড়ে আমদানিকারকরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে আমদানির চাপ বেড়েছে। সে অনুযায়ী প্রবাসীদের পাঠানো আয় বা রেমিটেন্স ও রপ্তানি আয় বাড়েনি। ফলে আমদানি শুল্ক দিতে বাড়তি ডলারের প্রয়োজন হয়। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি দেখা দিয়েছে। যে কারণে টাকার বিপরীতে বাড়ছে ডলারের দাম। তবে বাজার স্থিতিশীল রাখতে ব্যাংকগুলোর চাহিদার বিপরীতে ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২০ সালের জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত আন্তঃব্যাংক কারেন্সি মার্কেটে ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু এরপর থেকে ডলারের সংকটে বড় ধরনের আমদানি ব্যয় মেটাতে শুরু করে। নভেম্বরে ডলারের দাম দাঁড়ায় ৮৫ টাকা ৮০ পয়সা। এরপর দেড় মাস একই অবস্থানে থাকলেও এ বছর প্রথমবার তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৬ টাকা, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ দাম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপত্র। সিরাজুল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশে মহামারীর সময়েও ডলারের দাম বাড়েনি। সে সময় আমদানিও কম ছিল। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায়, বিশেষ করে ভারী যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য এলসি করতে হচ্ছে। খাদ্যপণ্যের আমদানি। আর শিল্পের কাঁচামালও বেড়েছে।এ ছাড়া করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিনের পেমেন্ট দিতে হচ্ছে।সাম্প্রতিক সময়ে ডলারের ওপর চাপ রয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, বাজারে বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ বেশি হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার কেনে। এখন সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজারের চাহিদা অনুযায়ী ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক চলতি অর্থবছরের 2021-22 সালের জুলাই থেকে 10 জানুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে মোট 250 কোটি (2.5 বিলিয়ন) ডলার বিক্রি করেছে। এর আগে বাজার স্থিতিশীল করতে ডলার কিনে রেকর্ড গড়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। 2020-21 অর্থবছরে, এটি ব্যাংক থেকে মোট প্রায় আট বিলিয়ন (800 কোটি) ডলার কিনেছে।
এর আগে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক 2013-14 অর্থবছরে 5.15 বিলিয়ন ডলার কিনেছিল। যা গত অর্থবছরের আগের সর্বোচ্চ ডলার কেনার রেকর্ড ছিল। আর্থিক খাতের এই নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি চলতি 2021-22 অর্থবছরের প্রথম মাসে জুলাই মাসে 20 মিলিয়ন 50 মিলিয়ন ডলার কিনেছে।